ত্বকে দাগ-ছোপ নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ব্রণের দাগ, পিগমেন্টেশন, বাম্পস, ডার্ক প্যাচ এই সমস্যাগুলো আমাদের সবার জীবনেই কমবেশি লেগে থাকে। ব্রণের দাগ বা পিম্পল তো তবুও চলে যায়, কিন্তু ছোপ ছোপ কালো দাগ নিয়ে তো মহা মুশকিল। যেতেও চায় না আবার মেক-আপ দিয়ে সবসময় ঢেকেও রাখা যায় না। এই দাগ-ছোপকেই বলা হয় পিগমেন্টেশন। আজ আমরা জানবো পিগমেন্টেশন কী, কেন হয় আর এ থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায় কী।
পিগমেন্টেশন কী:
খের ত্বকের বা শরীরের কিছু অংশে অনেক সময় রঙ বদলে যেতে থাকে। ছোপ ছোপ এই বদলে যাওয়া রঙের সমস্যাকেই পিগমেন্টেশন বলা হয়। স্কিন টোনে এই দাগগুলো যখন খুব বেশি গাঢ় হয়ে যায় তখন একে বলা হয় হাইপার পিগমেন্টেশন।
পিগমেন্টেশন কেন হয়:
পিগমেন্টেশনের জন্য প্রধান কারণ হিসেবে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মিকেই ধরা হয়। শরীরের খোলা অংশ যেমন মুখ, গলা, ঘাড়, হাত, ইত্যাদি অংশে সূর্যের আলো সরাসরি পড়ে বিধায় পিগমেন্টেশন হতে পারে। অনেকেই রোদে পোড়া কালচে দাগকেও পিগমেন্টেশন মনে করে থাকেন। তবে সানবার্ন ও পিগমেন্টেশনের মধ্যে কিন্তু পার্থক্য রয়েছে।
সূর্যের আলোর প্রভাব ছাড়াও নানা কারণে পিগমেন্টেশন হতে পারে। প্রেগন্যান্সির সময়ে হরমোনাল কারণে, মেলাসমা, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ইত্যাদি কারণে পিগমেন্টেশন দেখা দেয়। এছাড়া ত্বকের মেলানিন ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা মেলানিনের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়ে গেলেও দেখা দিতে পারে পিগমেন্টেশন।
পিগমেন্টেশন থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব:
পিগমেন্টেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী? নানারকম ফেস প্যাক ব্যবহার, বিভিন্ন ফেসিয়াল করার পরেও পিগমেন্টেশন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না? তার কারণ হল হয়তো আপনি নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন না।
তাই পিগমেন্টেশন ঠেকাতে সবচেয়ে জরুরি হল নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। ঘরের বাইরে বের হবার আগে শরীরের যেসব অংশ অনাবৃত থাকে সেসব অংশে অবশ্যই সানস্ক্রিন মেখে বের হতে হবে। সানস্কিন কেনার আগে এসপিএফ ৩০ এর বেশি আছে কি না সেটা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। ত্বকের যত্নে পিগমেন্টেশন শুরুর আগে থেকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। কারণ পিগমেন্টেশন হয়ে যাবার পর তা যদি ত্বকের একদম গভীরে পৌঁছে যায় তাহলে দাগ হালকা করা গেলেও পুরোপুরি পিগমেন্টেশন দূর করা যায় না।
পিগমেন্টেশন দূর করতে সানস্ক্রিনের পাশাপাশি রেটিনল জাতীয় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ক্রিম, ভিটামিন সি, লিকরিশ রুট ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। তবে হাইপার পিগমেন্টেশনের ক্ষেত্রে ডার্মাটলজিস্টের পরামর্শ গ্রহণ করাই ভালো।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপেল সাইডার ভিনেগার, অ্যালোভেরা এসব দিয়েও নিয়মিত রূপচর্চা করতে পারেন। এতে করে দাগ অনেকাংশেই হালকা হয়ে যাবে।
পিগমেন্টেশনের সমস্যা যে কারো হতেই পারে। এতে ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই। সমস্যার শুরুর আগে থেকে নিজের যত্ন নিলে এ জাতীয় সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই নিজের ত্বকের যত্নে সচেতন হোন।
Reference: