ফ্যাশন, বিউটি টিপস, লাইফ স্টাইল

J-Beauty আর K-Beauty-এর মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

apanese beauty vs korean beauty

সৌন্দর্য চর্চায় প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ট্রেন্ডের আনাগোনা লেগেই থাকে। কোরিয়ান বিউটি বা কে-বিউটি তেমনই এ সময়ের একটি জনপ্রিয় বিউটি ট্রেন্ড। কে-বিউটি মানেই অভিনব, বিস্তারিত  স্কিন কেয়ার রুটিন, সাথে মানানসই স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট। তবে সম্প্রতি কে-বিউটিকে টেক্কা দিয়ে  জাপানিজ বিউটি বা জে-বিউটিও হালের জনপ্রিয় বিউটি ট্রেন্ডের কাতারে জায়গা করে নিয়েছে অতি দ্রুত।

নিজেকে সুন্দর রাখার চেষ্টায় যারা সচেষ্ট, তাদের কাছে কে-বিউটি বা জে-বিউটি ট্রেন্ডগুলো কিন্তু বেশ পরিচিত। তবে জাপান আর কোরিয়ার সৌন্দর্যচর্চা, রীতি ও অভ্যাসের ভিতর বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। সেই পার্থক্যগুলোই আজ আমরা জানার চেষ্টা করব।

স্কিন কেয়ারের উদ্দেশ্য:

জাপান এবং কোরিয়ার সৌন্দর্যচর্চায় একটি স্পষ্ট পার্থক্য হচ্ছে তাদের স্কিন কেয়ারের উদ্দেশ্য। কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিন মানেই গ্লাস স্কিন। কোরিয়ান সব বিউটি প্রোডাক্টের মূলেই থাকে স্কিনকে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ও ফর্সা স্কিন। অপরদিকে জাপানিজ স্কিন কেয়ার রুটিন মানেই দাগমুক্ত, স্বচ্ছ ও কোমল স্কিন।

Hada Labo Foaming Cleanser

জাপানিজরা ত্বকের স্বাস্থ্য ও ত্বকের কোমলতা বজায় রাখার দিকে বেশি সচেতন। তাই স্কিন কেয়ার রুটিনে দুটি বিউটি ট্রেন্ডেই রয়েছে বেশ পার্থক্য।

স্কিন প্রবলেম ঠেকাবেন না সারাবেন?

জাপান ও কোরিয়ার বিউটি প্রোডাক্টগুলোর আরো একটি বিশেষত্ব হল ত্বকের প্রবলেম দূর করার উপায়। বেশিরভাগ কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্ট যেখানে ত্বকের সমস্যা গুলো দূর করার পেছনে কাজ করে সেখানে জাপানিজ বিউটি প্রোডাক্টগুলোর মূল লক্ষ্য থাকে ঝামেলা হওয়ার আগেই ত্বকের সমস্যাকে ঠেকানো। 

ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা: 

জাপান ও কোরিয়ার বিউটি প্রোডাক্ট ও স্কিন কেয়ার রুটিনগুলোর মাঝে একটি বড় মিল হচ্ছে এই দুই দেশেই রূপচর্চায় ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পেছনে জোর দেওয়া হয়। বিশেষ করে জাপানে মোচি-হাদা বা মোচি-স্কিনের ধারণাটা খুব জনপ্রিয়। মোচি হল একধরণের নরম কেক।

ময়েশ্চারাইজিং, সূর্যের আলো থেকে প্রতিরক্ষা এবং বারবার হাইড্রেশনের মাধ্যমে ত্বককে মোচির মত নরম ও কোমল রাখাটা জে-বিউটির একটি মূল অনুষঙ্গ।

স্কিন কেয়ার রুটিন: 

কোরিয়ান এবং জাপানিজ সৌন্দর্য চর্চায় সবচেয়ে বেশি পার্থক্য হল স্কিন কেয়ার রুটিনে। কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনে রয়েছে  ১০টি স্টেপ,

১। ডাবল ক্লিঞ্জ

২। টোনার

৩। এসেন্স

৪। ইমালশন

৫। সিরাম

৬। শিট মাস্ক

৭। আই ক্রিম

৮। ময়েশ্চারাইজার

৯। সানস্ক্রিন (সকালে)

১০। স্লিপিং মাস্ক (রাতে) 

অপরদিকে জাপানিজ স্কিন কেয়ার রুটিনকে বলা হয় দাগমুক্ত স্কিনের জন্য মিনিমাল স্কিন কেয়ার রুটিন। মাত্র ৪টি স্টেপেই পুরো স্কিন কেয়ার রুটিনটি সম্পন্ন হয়। 

১। ডাবল ক্লিঞ্জ

২। হাইড্রেটিং লোশন (টোনার)

৩। সিরাম

৪। ময়েশ্চারাইজার

Hada Labo Cleansing Oil

এই স্কিন কেয়ার রুটিন নিয়মিত মেনে চলার পাশাপাশি জাপানের মেয়েরা নিয়মিত ফেস মাস্কও ব্যবহার করে। 

কোরিয়ান ১০ স্টেপের এই স্কিন কেয়ার রুটিন অনেকের জন্যই নিয়মিত মেনে চলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে বিধায় জাপানিজ ৪স্টেপ মিনিমাল স্কিন কেয়ার রুটিন বেশ জনপ্রিয়। আর নিয়মিত জাপানিজ স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চললে ত্বকের শুষ্কতা থেকে শুরু করে অন্য সমস্যা ধীরে ধীরে দূর হয়ে ত্বক হয়ে ওঠে কোমল, মসৃণ ও দাগমুক্ত। 

স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের বৈশিষ্ট্য: 

কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টগুলোতে যেসব উপাদান ব্যবহার করা হয় তা একটু ভিন্ন। স্যালমন মাছের ডিম থেকে শুরু করে অদ্ভুত সব উপাদান দিয়ে তাদের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট গুলো তৈরি হয়, বলাই বাহুল্য, এই প্রোডাক্টগুলি স্কিনে দারুণভাবে কাজ করে।

অপরদিকে জাপানিজ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট তৈরি হয় প্রাকৃতিক উপাদানের নির্যাস থেকে। গ্রিন টি, ক্যামেলিয়া ফুলের নির্যাস, ভিটামিন সি ইত্যাদি জাপানিজ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের মূল উপাদান।  

ত্বক পরিচর্যায় কোরিয়ান পণ্য ও জাপানিজ পণ্য দুটোই হালের মার্কেটে একে অন্যের প্রতিযোগী। কোরিয়ান পণ্য প্যাকেজিং, কালার ও ফর্মুলার জন্য যেমন পরিচিত তেমনি জাপানিজ পণ্য পরিচিত এর প্রাকৃতিক উপাদানের গুণাগুণের জন্য। এন্টি এজিং হিসেবে জাপানিজ পণ্যের জুড়ি মেলা ভার। তবে এই দুই বিউটি ট্রেন্ডের মূল উদ্দেশ্য ত্বকের সৌন্দর্যবর্ধন। 

Reference: 

savvytokyo.com

synthesio.com

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *